ঢাকার বাসিন্দাদের কীভাবে সেবা দেওয়া হয়, তা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সেবাদাতা সংস্থার কর্মীদের শেখাতে চায় ঢাকা ওয়াসা। দেশি ও বিদেশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে সংস্থাটি ৭৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট করার প্রকল্প নিয়েছে।
অবশ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট করার নামে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে প্রকল্পে নানা খাতে বিপুল ব্যয়ের প্রস্তাবকে ‘অযৌক্তিক’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরেক দিকে প্রশ্ন উঠেছে যে, ঢাকা ওয়াসা আসলে বিদেশিদের কী শেখাবে। তাদের সরবরাহ করা পানি সরাসরি পান করার উপযোগী নয়। অনেক এলাকায় বাসিন্দারা পান দুর্গন্ধযুক্ত পানি। খাল ও নর্দমা ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার কারণে ঢাকা ওয়াসাকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পয়োব্যবস্থাপনায়ও ঢাকা ওয়াসা সফল হয়নি। মানুষের মল বাসাবাড়ি থেকে যায় নগরের খাল, ঝিল ও নদীতে। পয়োবর্জ্যের কারণে দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের পানি দুর্গন্ধে ভরা।
ঢাকা ওয়াসা বরং উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। পরিকল্পনার ঘাটতির কারণে সেসব প্রকল্পের পুরো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রকল্পের ঋণ শোধে বারবার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। বিগত ১৪ বছরে ১৪ বার বেড়েছে পানির দাম।
ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক আদিল মুহাম্মদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা ওয়াসার সেবা আন্তর্জাতিক মানের নয়। অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে সংস্থাটি অনেক পিছিয়ে। নাগরিক সেবা দিতে এখনো ডিজিটাল ব্যবস্থায় যেতে পারেনি তারা। তাহলে ঢাকা ওয়াসা কী প্রশিক্ষণ দেবে।
আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে। নিজেরা সুশাসনে ঘাটতি রেখে বিদেশিদের কী শেখাবে। তাই আগে নিজেদের আধুনিক করে, জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে, সেবার মান বাড়িয়ে দুর্নীতি বন্ধ করে তারপর বিদেশিদের প্রশিক্ষণ দিলে সেটি কার্যকর হবে।
0 Comments